নরসিংদীতে চীনা ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি টেক্সটাইল কারখানায় লি রংহুয়া (৫৭) নামের এক চীনা নাগরিকের মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের পাশাপাশি কারখানা মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের দাবিতে নিহতের স্ত্রী ঝেং মেইলিং, ছেলে লি রংইয়ান ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী অবস্থান করছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাত থেকে তারা সদর উপজেলার শীলমান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ শীলমান্দি এলাকার ফুজিয়ান ওনান টেক্সটাইল নামের একটি কারখানার প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। নিহত লি রংহুয়ার স্থায়ী ঠিকানা চীনের জিয়াংসু প্রদেশের ফেংচেং টাউনে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইংরেজি ভাষার দক্ষতা না থাকায় বক্তব্য প্রকাশ করতে পারছেন না তারা। তবে গুগল ট্রান্সলেটে লিখে বুঝিয়েছেন, চীনের ঝেজিয়াংয়ের নাগরিক লি রংহুয়ার মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ দিতে অনীহা জানিয়েছে ওই প্রতিষ্ঠান।

তাই এর মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতেই এখানে এসে অবস্থান নিয়েছেন তারা। তাদের মোমবাতি এবং খাদ্য দিয়ে সহযোগিতা করায় স্থানীয় বাংলাদেশিদের সহানুভূতিশীলতার প্রশংসা করেছেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক কর্মকর্তা জানান, গত ৩ মে রাত পৌনে ১১টায় কারখানার বেল মেশিন অপারেটর লি রংহুয়া একটি মেশিনের ওপর কাজ করছিলেন। দুর্ঘটনাবশত ওই বেল মেশিনের ভেতরে ঢুকে যান তিনি এবং সঙ্গে সঙ্গে তার শরীর দুই ভাগ হয়ে যায়।

এর মধ্যে কোমরের ওপরের অংশ মেশিনের বাইরে এবং কোমরের নিচের অংশ মেশিনের ভেতরে ঢুকে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে তার পরিবারের লোকজন কারখানায় এসেছেন। তারা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করছেন। কারখানার মালিক চেন জং হু নিহতের পরিবারের লোকজনকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন তা মানছেন না।

কারখানার আশপাশের এলাকাবাসী জানিয়েছে, চীনা নাগরিক লি রংহুয়া অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তার মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আর তার পরিবারের সদস্যদেরকে কারখানায় প্রবেশ করতে না দিয়ে অন্যায় করছে কর্তৃপক্ষ। তাদের অসহায়ত্ব বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার দাবি স্থানীয়দের।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রতিষ্ঠানটির আর কোনো কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরাও কথা বলেননি এ বিষয়ে।

নরসিংদী সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুনুর রশীদ বলেন, পরিবারের লোকজন কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে ঘটনার দিন রাতেই কারখানা কর্তৃপক্ষ একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিল।

বাংলা উক্তি