মুন্সীগঞ্জের আড়ৎগুলোতে তরমুজ রাখার স্থান না থাকায় ট্রলি ও ট্রলারের মধ্যে রেখেই চলছে তরমুজ বিক্রির চেষ্টা। তরমুজ কেনার পাইকার কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন আড়ৎদাররা। আর এতে তরমুজের দাম নেমে এসেছে অর্ধেকের নিচে।

আড়ৎদাররা বলছেন, গত ৩ দিন ধরে বাজারে ব্যাপক তরমুজের সরবারহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকন্ঠ মুক্তারপুর তরমুজ আড়তেও উঠছে প্রচুর তরমুজ। এতে আড়ৎগুলোতে আর জায়গা হচ্ছে না।

মঙ্গলবার বিকালে মুক্তারপুর তরমুজ আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি আড়তের সামনেই তরমুজের স্তুপ। সামনে রয়েছে ১২টি ট্রাক ভর্তি তরমুজ আর পাশের ধলেশ্বরী নদীতে ৬টি ট্রলারও তরমুজে বোঝাই।

ন্যায্যমূল্যে তরমুজ বেচবে আড়ৎন্যায্যমূল্যে তরমুজ বেচবে আড়ৎ
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এ সব ট্রলার ও ট্রাকে কয়েক লাখ তরমুজ রয়েছে। রাতে ট্রলার ও ট্রলি থেকে তরমুজ নামাতে দেখা গেলেও এগুলো কেনার ক্রেতা নেই বললেই চলে।

তরমুজ নিয়ে আসা একাধিক কৃষক ও পাইকার জানান, গত ৪-৫ দিন আগে শিলা বৃষ্টি হয়েছে। শিলা বৃষ্টি হলে তরমুজ সাধারণত নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া প্রতিদিনই কম বেশি ঝড়ো বৃষ্টি হচ্ছে। তাই কৃষকরা ভয়ে জমি হতে তরমুজ কেটে বিক্রির চেষ্টা করছেন। এতে বাজারে তরমুজের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে দামও কমে এসেছে।

তরমুজ বিক্রি করতে পটুয়াখালীর রাঙাবালি থেকে আসা কৃষক আরিফ হোসেন বলেন, ‘৪ দিন আগে আমাদের এলাকায় শিলা বৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রতিদিনিই ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে।

তাই নষ্ট হওয়ার ভয়ে জমি থেকে তরমুজ কেটে এই আড়তে নিয়ে এসেছিলাম। দুই দিন ধরে ঘাটে ট্রলার ভিড়িয়ে বসে আছি। বেচা–বিক্রি তেমন নাই। আগে যে তরমুজ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এখন তা ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দামে তরমুজ বিক্রি করলে আমাদের প্রচুর লোকসান হবে।’

একই এলাকার আরেক চাষি মিজান হাওলাদার বলেন, ‘এ বছর তরমুজের মৌসুমে ভারি বৃষ্টিপাতের কারনে চারার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই তরমুজের উৎপাদন খরচ বেশি। যে তরমুজ উৎপাদন করতে আমাদের ১২০ থেকে ১৫০ টাকা খরচ হয়েছে এখন তা ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।’

মুক্তারপুর এলাকার মাহিন এন্টার প্রাইজের মালিক আলমগীর কবির বলেন, ‘গত শনিবার থেকে তরমুজের দাম অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। কৃষকরা বলছে শিলা বৃষ্টির কারনে তারা তরমুজ জমি হতে তুলে নিয়ে এসেছে। আড়তে প্রচুর তরমুজের আমদানি হয়েছে কিন্তু ক্রেতা আগের চেয়ে কমছে। যার কারণে দাম অনেক কমলেও পাইকার সেভাবে আসছেনা।’

এ ব্যাপারে ওই স্থানের আড়ৎ সমিতির সভাপতি গোলাম ফারুক বলেন, ‘তরমুজের বাজার খুবই খারাপ। একটি ১০ থেকে ১২ কেজি ওজনের তরমুজ আড়তে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত ৪ দিন আগেও যা ৫০০ টাকায় বিক্রি হতো। আমরা আড়তে তরমুজের যায়গা দিতে পারছিনা। আমার এখানে ১২টি আড়তের মধ্যে প্রত্যেকটি তরমুজে ভরপুর। জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না।’

মা নিয়ে উক্তি বাংলা উক্তি